করোনা ভাইরাস প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে সিলেটের স্বাস্থ্য বিভাগ। যেহেতু ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যুক্তরাজ্য ও মধ্যপ্রাচ্য থেকে সরাসরি ফ্লাইট আসে এ কারণে আগে থেকেই নেয়া হয়েছে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা। বিমানবন্দরে সিভিল সার্জনের অধীন একটি মেডিকেল টিম সার্বক্ষণিক কাজ শুরু করেছে। একই সঙ্গে ভারতঘেঁষা তিনটি স্থলবন্দরেও মেডিকেল টিম কাজ করছে। সন্দেহ হলেই ওই স্থলবন্দরগুলোর কাছাকাছি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডাক্তাররা ভারত থেকে আসা যাত্রীদের পরীক্ষা করছেন। পাশপাশি স্বাস্থ্য অধিপ্তরের নির্দেশনা আসার আগেই ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডেঙ্গু ওয়ার্ডে ৮টি বেড প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
সিলেট হচ্ছে ভারতের সীমান্তবর্তী অঞ্চল। খুব বেশি দূরে নয় চীনের অবস্থান ও। মধ্যখানে ভারত। সিলেটের প্রচুর শিক্ষার্থী চীনের বিভিন্ন প্রদেশে পড়ালেখা করে। পাশাপাশি বাণিজ্যিক কারণে ব্যবসায়ী ও পর্যটকরা চীনে যাওয়া-আসা করেন। এ কারণে করোনা ভাইরাস নিয়ে সিলেটে আগে থেকেই সতর্কতাবস্থায় রয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সপ্তাহ খানেক আগে থেকেই তারা কার্যক্রম শুরু করেছেন। একজন ডাক্তারের নেতৃত্বে তিনজনের একটি মেডিকেল টিম সার্বক্ষণিক বিমানবন্দরে কাজ করছেন। সন্দেহ হলেই তারা হ্যান্ডি থার্মো স্কেল দিয়ে যাত্রীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করছেন। ইতিমধ্যে ওসমানী বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ ডাক্তারদের জন্য একটি কক্ষ বরাদ্দ দিয়েছেন। এই কক্ষে বসে কিংবা ফ্লাইট এসে নামলে যাত্রা পথে দাঁড়িয়ে তারা যাত্রীদের উপর নজর রাখছেন। কোনো যাত্রী সন্দেহ হলেই তারা স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর বাইরে বের হতে দিচ্ছেন। সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন- সিলেটে যুক্তরাজ্য, সৌদি আরব, দুবাই থেকে সরাসরি ফ্লাইট আসে।
প্রতিদিনই ২-৩ টি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট এসে অবতরণ করে। এসব ফ্লাইটের যাত্রীদের উপর নজর রাখা হচ্ছে বেশি। বিশেষ করে চীন হয়ে কেউ অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটে এলেও তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সিলেটের সিভিল সার্জন ডা. প্রেমানন্দ মন্ডল জানিয়েছেন- করোনা ভাইরাস নিয়ে বিশ্বজুড়ে আতঙ্ক দেখা দেওয়ায় সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রথমেই মেডিকেল টিম প্রেরণ করা হয়। এই মেডিকেল টিম কাজ করছে। ওসমানী বিমানবন্দরের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয় রেখেই মেডিকেল টিম কাজ করছে বলে জানিয়েছেন তিনি। আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ রুটে যেসব যাত্রী আসছে সন্দেহ হলেই তাদের হ্যান্ডি থার্মো দিয়ে পরীক্ষা করা হচ্ছে। একই সঙ্গে সিলেটের তামাবিল স্থলবন্দর, জকিগঞ্জ ও শ্যাওলা শুল্ক স্টেশনে মেডিকেল টিম কাজ করছে। তিনি বলেন- সিলেটের সঙ্গে চীনের সরাসরি যোগাযোগ নেই। এরপরও যারা ভারত থেকে আসছেন তাদের দিকে নজর রাখা হচ্ছে। এদিকে করোনা ভাইরাসের সর্তকতা সম্পর্কে ইতিমধ্যে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সমন্বয় সভা করা হয়েছে। এই ভাইরাসের লক্ষণ ও ক্ষতিকারক দিক নিয়ে ডাক্তারদের ব্রিফ করা হয়েছে। সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ পরিচালক ডা. হিমাংশু লাল রায় জানিয়েছেন- স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে একটি নির্দেশনা রয়েছে। এই নির্দেশনার আগেই ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ডেঙ্গু ওয়ার্ডে ৮টি বেড সংরক্ষণ করা হয়েছে। কোনো রোগী এলে যাতে তাৎক্ষণিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করা যায় সে প্রস্তুতি রয়েছে।
মন্তব্য করুন